খুব সুন্দর এক রোদেলা দিন। ফুরফুরে পরিবেশ। বাস চলতেছে তো চলতেছে..........
দুপুর গড়িয়ে বিকেল। হঠাৎ ড্রাইবার বলল এসে গেছি। বাস থেকে নামলাম। হাতে নেই কোন ব্যাগ, লাগেজ বা কোন কিছু। শুধুই আমি। কিন্তু বাস এটা কোথায় থামলো?
লক্ষ্য করলাম সাতখামাইর নামিয়ে দিয়েছে। নামব বরমী বাজার তবে এত আগে কেন নামিয়ে দিল বুঝলাম না। বাস থেকে নেমে একটা রিকসা নিলাম। যেহেতু যাব কোষাদিয়া তাই ভাবলাম বড়নল হয়ে শর্টকাট মেরে দিই।
রিকসাওয়ালা হরদম পেডেল মেরে চলেচে। পায়ে টানা রিকসা। এই রিকসাগুলো চলতে অনেক ভাল লাগে। রাস্তা একদম খালি। কোথাও কোন জনমানব এর চিহ্ন পড়ছে না। অবাক লাগছে।
কিছুক্ষন পর মনে হল রিকসা একটা পুড়োনো মফস্বল শহরের গলি দিয়ে চলছে। বাড়ি-ঘড় গুলো অনেক পুড়োনো। দেয়ালে সবুজ শেওলা জমে আছে। প্রতিটা বাড়িরই বড় বড় দেয়াল।
দেয়ালের ভিতরে বড় বড় আম গাছ, লিচু গাছ। পাকা রাস্তায়ও শেওলা জমে আছে। মনে হয় অনেক দিন কেউ এই রাস্তায় চলাচল করেনা। কিন্তু বড়নলে এত পুড়োনো বাড়িঘর কবে তৈরী হল?
কখনো তো দেখিনি। বড়নলের প্রতিটি রাস্তা, গলি আনাচ কানাচ আমার চেনা। রিকসা চলছে কোন ক্লান্তি ছাড়া। রিকসাওয়ালা একবারও প্রশ্ন করছে না কোথায় নামবো, কার বাড়ী যাব বা এইরকম কোনো কথা কিছুই বলছে না।
দুই দেয়ালের মাঝখান দিয়ে যেতে যেতে এক সময় বিরক্ত হয়ে পড়লাম। কতক্ষন চলা যায় এভাবে? নিজের এলাকা যদি হঠাৎ করে এভাবে অচেনা হয়ে যায় তাহলে বোধহয় সবারই একটা ভয় লাগবে বুকের ভেতর।
এদিকে সন্ধ্যে হয়ে আসছে। সূর্যের আলো ম্লান হয়ে গেছে অনেকক্ষন হয়ে গেল। অবশিষ্ট গোধুলীও যায় যায় অবস্থা। কি করবো বুঝতে পারছিনা। এমন সময় হঠাৎ ফোনের আওয়াজ শোনলাম।
টুংটুং টুং টুং টুং শব্দ। সিম্ফনি মোবাইলের এই রিংটোন আজকাল সবার মোবাইলের রিংটোন বলা যায়। ভাবলাম রিকসাওয়ালার ফোন হয়ত এসেছে। তবে নাহ, এটা ছিল আমার ফোন।
আমার ঘুম ভাংলো রিংটোনের শব্দে। বালিশের নিচ থেকে মোবাইলটা বের করলাম। মোবাইলে অফিসের বসের নাম দেখে অবাক হলাম। ধরব, না ধরব না ফোন ভাবছি এমন সময় আবার শব্দ ফোনের।
ঘড়িতে দেখি সকাল ৯.৩০ বাজে। বসের ফোন ধরার পর ওপার থেকে শব্দ আসছে “কি জনাব কাজে আসা লাগবে না?” আমি কি বলব বুজতে পারছিনা। গতকাল রাতে ভাল বৃষ্টি হচ্ছিল।
আমি আর আনিস ভাই মিলে খিচুড়ী রান্না করেছিলাম রাত্রে। একে তো বৃষ্টির রাত অন্যদিকে পেটপুরে খিচুড়ী খাওয়া তাই দুয়ে মিলে চরম পর্যায়ের ঘুম । আর তার সাথে উলটপালট স্বপ্ন!!!!!
তাড়াহুড়ো করে পেন্ট পড়লাম কাজে যাওয়ার জন্য। গামছা গলায় দিয়ে ব্রাশ করতে গিয়েও আবার এসে পড়লাম তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে।
টেবিল থেকে মানিব্যাগ আর রুমের চাবি নিয়ে দৌড়ে রুম তালা মেরে রাস্তায় বের হলাম।
কিন্তু কেমন জানি লাগছে নিজেকে। কি যেন নেই নেই মনে হচ্ছে। তারপর খেয়াল করলাম ফুলপ্যন্ট পরে আর গলায় গামছা দিয়ে রাস্তায় বের হয়েছি।
আমার গায়ে কোন শার্ট্ নেই!!!!
Comments
Post a Comment